উৎসবে-অনুষ্ঠানে থাকতে হবে টিপটপ। এদিকে মেকআপ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সব সময় মনটাকে অস্থির করে তোলে। সাজগোজ করতে সাধারণত মেয়েরা বেশ পছন্দও করেন। কিন্তু মেকআপ বেশি সময় ধরে রাখার জন্য কী কী করা উচিত, কী কী ব্যবহার করলে ১২ ঘণ্টা পরও মেকআপ থাকবে একদম পারফেক্ট, তার জন্য কিছু ট্রিকস রয়েছে। ঈদে যদি হঠাৎ বৃষ্টি নেমে যায়, তাহলে খাটিয়ে নিন এ রকম ট্রিকস।
ত্বক ঠান্ডা রাখুন
মুখের ত্বকে মেকআপ প্রয়োগ করার আগে কয়েকটি বরফের টুকরা নিয়ে ১০-১৫ মিনিটের জন্য মুখে ঘষুন। এই পদ্ধতিটি মেনে চলার চেষ্টা করতে পারেন। তাতে মেকআপ থাকে অনেকক্ষণ ও ত্বক থাকে নরম ও শান্ত। বরফের কিউব দিয়ে মুখ, ঘাড় সর্বত্র প্রয়োগ করতে পারেন। আরামও পাবেন সাময়িক।
দীর্ঘস্থায়ী মেকআপ
বর্ষায় যদি আপনার চোখের মেকআপ ঘেঁটে যায়, সে ক্ষেত্রে জানবেন বাজারের এমন দীর্ঘস্থায়ী কাজল বা আইলাইনার রয়েছে, যার ব্যবহার এই সমস্যার সুরাহা করতে পারে। কারণ, এই ধরনের কাজল, আইলাইনার অন্তত ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা আপনার চিন্তা দূর করবে।
ওয়াটারপ্রুফ বেস
এই সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে মেকআপের ক্ষেত্রে বেশ সমস্যা দেখা দেয়। মেকআপ গলে যায়, ঘেঁটে যায়। যার জন্য এই সময় ওয়াটারপ্রুফ বেজ মেকআপ হিসেবে মুখের ত্বকে হালকা পাউডার ব্যবহার করলে, তা এই সময়ে দারুণ কাজে দেয়। এই সময় মেকআপে বিকল্প হিসেবে এমন এক স্পঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন, যার একদিকে রয়েছে ভেজা স্পঞ্জ, উল্টো দিকে শুকনো পাউডার। তার যেকোনো একটা দিক অনায়াসে প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারেন।
প্রাইমার ব্যবহার করুন
ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পর সরাসরি ফাউন্ডেশন না লাগিয়ে প্রথমে প্রাইমার লাগান। একটি ভালো মানের প্রাইমার ত্বকের টোনকে সমান করে এবং যেকোনো অপূর্ণতা দূর করে। একটি দীর্ঘস্থায়ী মেকআপ লুক পেতে প্রাইমার প্রয়োগ করা হলো মূল উপকরণ। তাতে একদিকে মেকআপ দেখতে যেমন উজ্জ্বল লাগবে, তেমনি থাকবেও অনেকক্ষণ।
ভালো কমপ্যাক্ট বা পাউডার ব্যবহার করুন
ফাউন্ডেশনকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য এই কমপ্যাক্ট বা পাউডার অত্যন্ত আবশ্যিক। এতে ত্বককে আরও সুন্দর দেখায়। পাশাপাশি ত্বকের টেক্সচার ও ধরন দেখে কনসিলার শেড বেছে নিন। তাতে সামান্য পাউডার দিয়ে আলতো করে সেট করে নিন।
সেটিং স্প্রে দিয়ে সেট করুন
মেকআপ প্রয়োগ করার পরে, এটি একটি মেকআপ সেটিং স্প্রে দিয়ে সেট করতে ভুলবেন না। সেটিং স্প্রে চূড়ান্ত টাচআপ হিসেবে কাজ করে এবং আপনার মেকআপকে যথাস্থানে রাখতে সাহায্য করে। ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং আপনার ত্বকের মেকআপকে অনেকক্ষণ ধরে রাখতে সহায়তা করে।
তবে এই গরমে অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। তবে হালকা করে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। সে জন্য অল্প ফাউন্ডেশন নিয়ে সেটিকে ফোঁটা ফোঁটা করে সারা মুখে লাগিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। অথবা এর পরিবর্তে আপনি সিসি ক্রিম বা বিবি ক্রিমও লাগাতে পারেন। ত্বকের পিগমেন্টেশন ঢাকতে কনসিলার লাগানো বেশ জরুরি। বেজ তৈরি করার পর সেটিকে লুজ পাউডার কিংবা ভালো মানের ওয়াটারপ্রুফ কমপ্যাক্ট দিয়ে সেট করতে হবে।
কারণ বর্ষার আর্দ্র হাওয়ায় ত্বকের তৈলাক্ত ভাব সাধারণত একটু বেশিই হয়, তাই পাউডার দিয়ে বেজ মেকআপটা সেট করাটা খুব জরুরি। সেই সঙ্গে ত্বকের টি জোনটার ওপর এ সময় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, ত্বকের অন্যান্য অংশের তুলনায় টি জোনটা বেশি তৈলাক্ত হয়। আমার একটা ব্যক্তিগত অভিমত আছে, সেটি হলো, আমি সাধারণত বর্ষাকালে সাজগোজের ক্ষেত্রে বেজটা খুব হালকা রেখে চোখ ও ঠোঁটের সাজে বেশি গুরুত্ব দিই। তাই যেকোনো ভাইব্রেন্ট রঙের আইশ্যাডো দিয়ে চোখ সাজাতে পারেন মনের মতো করে। হোক সেটা স্মোকি আই অথবা কাট ক্রিজের মতো গর্জিয়াস কোনো আই। তবে আইলাইনার এবং মাসকারা অবশ্যই ওয়াটারপ্রুফ হতে হবে। ঠোঁটের ক্ষেত্রে বোল্ড শেডগুলো বেশি ভালো লাগবে।
একনজর দেখে নিতে পারেন-
১. বর্ষায় মেকআপের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন ক্রিম যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করবেন। আর মূল আকর্ষণ থাকবে চোখ ও ঠোঁটের সাজে।
২. জেল লাইনার ব্যবহার করতে পারেন, যা আপনার ত্বকের সঙ্গে মিশে ভিন্ন লুক আনতে সাহায্য করবে।
৩. চোখের সাজে ওয়াটারপ্রুফ মাসকারা ব্যবহার করুন। এটি চোখকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করবে।
৪. লিপস্টিক হিসেবে বেছে নিন ম্যাট কালার লিপস্টিক। তাহলে বারবার লিপস্টিক লাগানোর ঝামেলা থাকবে না। ভালো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ব্যবহার করবেন, যা দীর্ঘ সময় ধরে আপনার ঠোঁটকে ধুলাবালু থেকে রক্ষা করবে এবং ময়েশ্চারাইজ করবে।
৫. হালকা কালার দিয়ে মুখে ব্লাশন করে নিতে পারেন। তবে সঙ্গে একটু ম্যাট কালার দিয়ে কম্বিনেশন করে নিন। অবশ্যই ম্যাট কালার ব্যবহার করবেন, যাতে ত্বকে সুন্দরভাবে মিশে যায়।
৬. যেহেতু বারবার ভিজে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাই হালকা ও ফ্রেশ লুক রাখার চেষ্টা করবেন। আর ব্যাগে হালকা তোয়ালে রাখবেন, যাতে হাত, মুখ ও চুল সহজেই মুছে নিতে পারেন।